THE PROCASTINATOR

Thursday, October 14, 2010

শব্দের পোস্টমর্টেম-১০৮

অন্তর নিয়ে আমরা নিত্য টানাপোড়েনে থাকি। শব্দটির রয়েছে নানা রূপ, নানা আবেদন এবং নানামুখী প্রয়োগ।

অন্তর বেদে ব্যবহৃত শব্দ। সংস্কৃতে এটার রয়েছে নানা অর্থ। মধ্যবর্তী (তুলনীয় আবস্তায় anantara, লাতিনে inter, গথিকে anthar, ইংরেজিতে interior )আত্মীয়, স্বীয়, অন্য, সদৃশ্য, ব্যবধায়ক, অন্তকরণ, পরমাত্মা ইত্যাদি।

কিন্তু বাংলায় অন্তর মানে বাহির (ধেকা মারি করিব তোরে পুরির অন্তর - মীনচেতন)।

বাংলায় ক্রিয়া-বিশেষণ হিসেবে অন্তর শব্দের প্রয়োগ রয়েছে। হরিচরণ বন্ধ্যোপাধ্যায় মতে, এ অন্তরের মূল সংস্কৃত 'অনন্তর'। অর্থাৎ বাংলা ক্রিয়া-বিশেষণ অন্ত মানে পরে (দশ দিন অন্তর রাজার দশা করিল গোচর - গোপীচন্দ্র)। আর অন্তরে মানে পরে (ইহার অন্তরে তবে শুন সর্বজনে - কাশীদাসী মহাভারত)। এই পরে বা অন্তে ভাবধারায় বাংলায় বিবাহঅন্তরে, মাসান্তরে, পঞ্চাদিনান্তরে, সন্ধ্যাধূপ-অন্তরে শব্দের প্রয়োগ রয়েছে (দেখুন, হরিচরণের বঙ্গীয় শব্দকোষ)।
বাংলায় বিশেষ্য হিসেবে অন্তর মানে মন (অন্তরমম বিকশিত কর অন্তরতর হে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর; প্রতারণাহীনা তবু সমূহ সুন্দর/শীর্ণকায়া স্রোতস্বিনী শোধিত অন্তর - মুহাম্মদ নুরুল হুদা), ভেতর (তিনি এখন ঘরের অন্তরে), পার্থক্য (বড় সাহেবের সাথে মেজ সাহেবের মতান্তর চলছে), তফাত (কিঞ্চিৎ অন্তরে কিঙ্করকে দেখিতে পাইয়া - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর), অবসান (শিশুতা অন্তরে হৈল যৌবন বিস্তার - ভবানন্দ), আত্মীয় (অন্তরতম হে সুন্দর)।
অন্যদিকে বিশেষণে অন্তর মানে ভিন্ন, অন্য (অবশেষে সে দেশান্তরে গেল)।

0 Comments:

Post a Comment

<< Home